IP Phone নিয়ে অনেকের মনেই অনেক প্রশ্ন আছে। কি ধরনের ফোন এটা? কি প্রযুক্তিতে চলে এই ফোন? প্রচলিত ফোনের সাথে এই ফোনগুলোর পার্থক্য কী? এই সব প্রশ্নের উত্তর চলুন ধাপে ধাপে জেনে নেই।
আইপি ফোন বা ইন্টারনেট প্রটোকল ফোন হচ্ছে একধরণের ডিভাইস যা দিয়ে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভয়েস কল করতে পারছেন। ট্রাডিশনাল ফোন থেকে এই ফোন সিস্টেম অনেক সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। VoIP (Voice over Internet Protocol) নেটওয়ার্ক দ্বারা চালিত হয় বলে একে অনেকেই VoIP ফোনও বলে থাকে।
এই ফোনগুলো ডেস্ক ফোন, কনফারেন্স ফোন এবং কর্ডলেস ফোন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ টেলিফোনের মত হলেও এর ব্যবহারিক সুবিধা সাধারণ টেলিফোনের চেয়ে অনেক বেশি।
আইপি ফোন এবং প্রচলিত ল্যান্ডলাইন ফোনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো যোগাযোগের পদ্ধতি। প্রচলিত ফোনগুলো PSTN (পাবলিক সোইচড টেলিফোন নেটও য়ার্ক) এর মাধ্যমে সংকেত পাঠায় এবং গ্রহণ করে, যা তামা তার বা ফাইবার অপটিক্স ব্যবহার করে, যেখানে আইপি ফোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভয়েস ডেটা প্যাকেট পাঠায়।
১) ইন্টারনেট সংযোগ: একটি স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।
২) ভিওআইপি সেবা প্রদানকারী: যদি আপনি বাড়ির জন্য আইপি ফোন সেটআপ করেন, তবে আপনাকে একটি ভিওআইপি সেবা প্রদানকারী অথবা ব্যবসায়িক সেটআপের জন্য একটি ভিওআইপি পিএবিএক্স প্রয়োজন হবে।
৩) রাউটার বা সুইচ: আপনার আইপি ফোনটি যথেষ্ট ব্যান্ডউইথ সহ একটি রাউটার বা সুইচের সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
৪) বিদ্যুৎ সরবরাহ: নিশ্চিত করুন যে আপনার আইপি ফোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে, যা ইথারনেট কেবলের মাধ্যমে (পাওয়ার ওভার ইথারনেট বা পিওই) অথবা একটি স্ট্যান্ডার্ড পাওয়ার অ্যাডাপ্টারের মাধ্যমে আসতে পারে।
১) রাউটার বা সুইচে সংযোগ: আইপি ফোনের ইথারনেট কেবলটি রাউটারের বা সুইচের একটি খালি পোর্টে সংযুক্ত করুন।
২) বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা: যদি আপনার আইপি ফোন পাওয়ার ওভার ইথারনেট সমর্থন করে, তবে এটি রাউটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাবে। অন্যথায়, একটি পাওয়ার অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করুন।
৩) কনফিগারেশন সম্পন্ন করা: ফোনটি চালু করুন এবং প্রদত্ত নির্দেশাবলী অনুসরণ করে সেটআপ সম্পন্ন করুন।
এভাবে আপনি সহজেই আপনার আইপি ফোনকে নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন এবং ব্যবহার শুরু করতে পারবেন।
১) খুবই কম খরচে যোগাযোগ: যেহেতু এই ফোন সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর তাই এতে বাড়তি কোন কল রেট-এর ঝামেলা নেই বা মাসিক কোন বিলও আসবে না।
২) বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ: এধরনের ফোনের জন্য সাধারণ ফোন কিংবা মোবাইল ফোনের মতো নেটওয়ার্ক প্রয়োজন হয় না। এই ফোনগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে বলে এর মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
৩) খরচের ওপর নিয়ন্ত্রণ: আপনি নিজে ঠিক করতে পারবেন কত ডাটা ব্যবহার করবেন। অপ্রয়োজনীয় কল এড়িয়ে ডাটা সেভ করতে পারবেন।
৪) কনফারেন্স কল: এধরনের ফোনের মাধ্যমে কনফারেন্স কলও করা যায়, অর্থাৎ একাধিক ব্যক্তির সাথে একই কলে কথা বলা যায়।
৫) ভিডিও কল: কিছু কিছু আইপি ফোনের মডেলে ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা রয়েছে। ফলে ভিডিও কলের জন্য আর বাড়তি কোন ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না।
৬) অন্যান্য সুবিধা: মডেল ভেদে আইপি ফোনগুলোতে কল ফরোয়ার্ডিং, ভয়েসমেইল, কল রেকর্ডিং, কল ট্রান্সফারিং ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।
আজকের ডিজিটাল যুগে, আইপি ফোন ব্যবসা ও ব্যক্তিগত কাজে অপরিহার্য এক টুল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক কল সেন্টার থেকে শুরু করে রিমোট ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টে আইপি ফোনের ব্যবহার মানুষের যোগাযোগ পদ্ধতিতে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যেখানে কল ফরোয়ার্ডিং, ভিডিও কনফারেন্সিং এবং ভয়েসমেইল ইন্টিগ্রেশনের মতো বৈশিষ্ট্যগুলো যুক্ত হয়েছে।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদের সেবা দিতে যেমন এধরনের ফোন ব্যবহার করছে তেমনি নিজেদের মধ্যকার যোগাযোগের জন্য পুরনো ল্যান্ডফোনের পরিবর্তে আইপি ফোনের দিকে ঝুঁকছে।
No Comments
Leave a comment